সততার পুরস্কার গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর।সততার পুরস্কার সাধুরীতে লেখা একটি গল্প । যা আল্লাহর পরীক্ষা এবং পুরস্কৃত প্রকৃতি সম্পর্কে একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করেছিল। গল্পটি একটি আরব দেশে বসবাসকারী তিন ব্যক্তিকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল: একজন ধবলরোগী একজন টাকওয়ালা এবং আরেকজন অন্ধ।
ফেরেশতার অনুগ্রহে এই তিন জনেরই শারীরিক ত্রুটি দূর হলো। তিন জনই সুন্দর সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের চেহারা পেল। শুধু তাই নয়, ফেরেশতার কৃপায় প্রথম জন একটি উট থেকে বহু উটের, দ্বিতীয় জন একটি গাভি থেকে বহু গাভির এবং তৃতীয় জন একটি ছাগল থেকে বহু ছাগলের মালিক হয়ে গেল। কিছুদিন পর এদের পরীক্ষা করার জন্য ফেরেশতা গরিব বিদেশির ছন্মবেশে এদের কাছে হাজির হলেন। তিনি একেক জনের কাছে গিয়ে তাদের আগের দুরবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে কিছু সাহায্য করতে বললেন।
কিছু দিন পর, ফেরেশতা তিনজনকে আবার পরীক্ষা করার জন্য একজন দরিদ্র বিদেশীর ছদ্মবেশে ফিরে আসেন। তিনি আলাদাভাবে প্রত্যেকের কাছে গিয়েছিলেন এবং তাদের পূর্বের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাদের সহায়তার অনুরোধ করেছিলেন।
প্রথম দুই ব্যক্তি, অকৃতজ্ঞ হয়ে এবং তাদের পূর্বের শর্তগুলি ভুলে গিয়ে, ছদ্মবেশী দেবদূতকে দূরে সরিয়ে দেয়, কোনও সাহায্য করতে অস্বীকার করে। যাইহোক, তৃতীয় ব্যক্তি, কৃতজ্ঞ চিত্তে, স্বেচ্ছায় স্বেচ্ছায় তার যা কিছু আছে তা দিয়ে ফেরেশতার অনুরোধ পূরণ করতে সম্মত হয়েছিল। আল্লাহ তার অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা এবং উদারতায় অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন, তাকে তার সম্পদ রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন।
বিপরীতে, প্রথম দুই ব্যক্তির উপর আল্লাহর অসন্তুষ্টি নেমে আসে এবং তারা যে নিয়ামত পেয়েছিলেন তা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাদের শারীরিক অক্ষমতা ফিরে আসে, এবং তাদের সম্পদ অদৃশ্য হয়ে যায়। অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিরা তাদের কৃতকর্মের প্রকৃত মূল্য বুঝতে পেরে তাদের অকৃতজ্ঞতার ফল ভোগ করেছে।
এই গল্পটি একটি শক্তিশালী শিক্ষা হিসাবে কাজ করে যে আল্লাহ মানুষকে বিভিন্ন উপায়ে পরীক্ষা করেন এবং সেই অনুযায়ী তাদের পুরস্কৃত করেন। এটি কৃতজ্ঞতা এবং উদারতার গুরুত্বের উপর জোর দেয়, কারণ যারা আল্লাহর নেয়ামতের প্রশংসা করে আল্লাহ্ তাদের উত্তম নেয়ামত দান করে।
সততার পুরস্কার গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :
‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী-’পরে।
সকলের তরে সকলে আমরা,
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’
- ক. আল্লাহর দূতের কাছে ধবলরোগী কি চেয়েছিল?
- খ. অন্ধ ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ খুশি হয়েছেন কেন?
- গ. ‘উদ্দীপকের মূলভাব ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূলভাবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ’- ব্যাখ্যা কর।
- ঘ. ‘‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সমগ্রভাব উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে’ বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : নবম শ্রেণির ছাত্র জুনায়েদ। স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে সে একটি মানিব্যাগ খুঁজে পায়। খুলে দেখে অনেক টাকা। মানিব্যাগে মোবাইল নম্বর খুঁজে পেয়ে এর মালিককে ফোন দেয়। মানিব্যাগের মালিক টাকা ফেরত পেয়ে জুনায়েদের সততায় মুগ্ধ হয়।
- ক. স্বর্গীয় দূতের কাছে ধবলরোগী কী চেয়েছিল?
- খ. ধবলরোগী ও টাকওয়ালার প্রতি আল্লাহ বেজার হলেন কেন?
- গ. উদ্দীপকের জুনায়েদের সাথে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের কোন চরিত্র সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর।
- ঘ. ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’ উক্তিটি উদ্দীপক ও সততার পুরস্কার গল্পের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : সাদেক ও রনি দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শিক্ষাজীবনের পাঠ চুকিয়ে দুই বন্ধু অনেক ঘোরাঘুরি করেও কোনো চাকরি জোটাতে পারল না। দুই জনে স্থির করল ব্যবসা করবে। কিন্তু টাকা কোথায়। এগিয়ে এলেন ধনী ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান। তিনি সাদেক ও রনিকে কোনো শর্ত ছাড়াই ব্যবসা করার জন্য পুঁজি দিলেন, তবে শর্ত হিসেবে একটি শর্ত দিলেন আর তা হচ্ছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হলে গরিব দুঃখীদের যথাসাধ্য সাহায্য করতে হবে। সাদেক ও রনি বেশ উদ্যমের সাথে ব্যবসায় শুরু করলেও অল্প কিছুকাল পরই লোকসান দিয়ে দিয়ে ঋণে জর্জরিত হয় ব্যবসায় ইস্তফা দিল।
- ক. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কত খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন?
- খ. ‘তোমার জিনিস তোমারই থাক’ ব্যাখ্যা কর।
- গ. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সাথে উদ্দীপকের বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর।
- ঘ. “‘সততার পুরস্কার’ গল্পে আল্লাহর কৃপা থাকলেও উদ্দীপকে ঘটেছে তার উল্টো চিত্র” উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : চুরির অভিযোগে কিছু লোক জনৈক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যানের ইউনিয়ন পরিষদে হাজির করল। ঘটনার বিবরণ শুনে তিনি চৌকিদার আমজাদকে ডেকে নির্দেশ দিলেন বন্দিকে তার বাড়িতে রাখতে। ঘটনাক্রমে আমজাদ জানতে পারল বন্দি ব্যক্তি আর কেউ নয়, সে দশ বছর আগে আমজাদের সন্তানকে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছিল, নিজ গৃহে নিয়ে গিয়ে আহত সন্তানের সেবা করেছিল। আমজাদ তখন তাকে বাঁচানোর সংকল্প করল এবং বন্দির কাছ থেকে জেনে নিল যে চুরিতে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না। যখন সে জানতে পারল চুরিতে দোষীসাব্যস্ত করা ব্যক্তির কোনো হাত নেই তখন সে যুক্তি প্রমাণ সংগ্রহ করতে লাগল দোষীব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য।
- ক. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল বাণী কী?
- খ. অন্ধ ব্যক্তির সম্পদ তার নিজের কাছে রয়ে গেল কেন?
- গ. আমাদের সাথে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের অন্ধ ব্যক্তির কীরূপ সাদৃশ্য রয়েছে বুঝিয়ে বল।
- ঘ. “উদ্দীপক এবং ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের উভয় ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতাবোধের পরিচয় পাওয়া যায়”- উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল ৫:নেলমা ব্রাজিলের ডু সুল শহরে একজন হেয়ারড্রেসার হিসেবে কাজ করেন। তিনি সম্প্রতি নীতিনিষ্ঠার এক পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিলেন। যখন তার এলাকায় বন্যা হয়, তখন নেলমা তার কাস্টমারদের একজনের কাছ থেকে কিছু জামাকাপড় সাহায্য পেয়েছিলেন। জামাকাপড় আলাদা করার সময় তিনি কয়েকটা প্যান্টের পকেট থেকে ১০০০ (মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ টাকা খুঁজে পেয়েছিলেন। নেলমা যে পরিমাণ টাকা পেয়েছিলেন, সেটা তার প্রায় সাত মাসের বেতনের সমান ছিল আর আসলেই তার টাকার প্রয়োজন ছিল। তার নিজের বাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আর তার বাবা ও ভাইবোনেরা তাদের বেশির ভাগ জিনিসপত্র হারিয়েছিল। কিন্তু, নেলমার বিবেক তাকে সেই টাকাগুলো রেখে দিতে বাধা দেয়। পরদিন সকাল সকাল তিনি সেই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, যিনি ওই জামাকাপড় দান করেছিলেন। সেই মহিলা টাকাগুলো ফেরত পেয়ে খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন। তিনি খুশি হয়ে সেখান থেকে ৫০০ ডলার নেলমাকে পুরস্কার দেন।
- ক. ‘দোহাই’ শব্দের অর্থ কী?
- খ. ফেরেশতাদের পরিচয় ব্যাখ্যা করো।
- গ. উদ্দীপকের নেলমা ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা করো।
- ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সমগ্রভাবকে ধারণ করেনি’— মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো
সৃজনশীল ৬:জাহিন ও মাহিন দরিদ্র পিতার সন্তান হলেও বড়োলোক মামার আর্থিক সাহায্যের কারণে তারা ঢাকা শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। নদী ভাঙনের ফলে মামা আজ সর্বস্বান্ত। মামা তাদের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে জাহিন মামাকে এড়িয়ে চলে এবং মামার অবদান অস্বীকার করে। কিন্তু মাহিন মামাকে সাহায্য করল এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। মামা তাকে দোয়া করলেন।
- ক. স্বর্গীয় দূত কাকে একটি গাভিন উট দিলেন?
- খ. টাকওয়ালার মনে কীরূপ দুঃখ ছিল?
- গ. উদ্দীপকের জাহিনের মনোভাবের সঙ্গে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্রের বিশ্লেষণ করো।
- ঘ. উদ্দীপকের মাহিনের কাজের মধ্যেই ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল শিক্ষা নিহিত— মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল ৭:সৌদি আরবে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি গাড়ি চালকের গাড়িতে একজন সৌদি ব্যবসায়ী ভুলে ষাট হাজার রিয়ালসহ একটি ব্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ফেলে নেমে যান। ওই ট্যাক্সিচালক ব্যাগভর্তি টাকা ও কাগজপত্র চুরি না করে তা ট্যাক্সিচালক সমিতিতে জমা দেন। পরবর্তীতে অনেক খোঁজ করে প্রকৃত মালিককে টাকা ও কাগজপত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সৌদি লোকটি ড্রাইভারের এমন সততায় মুগ্ধ হয়ে বকশিশ দিতে চাইলে ড্রাইভার বলে, আমি তো আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।
- ক. ফেরেশতা উট চাইলে উটওয়ালা তাকে কী বলল?
- খ. আল্লাহ ধবল ও টাক রোগীর প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন কেন?
- গ. উদ্দীপকের ড্রাইভারের সাথে ‘সততার পুরস্কার গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
- ঘ. উদ্দীপকে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সবদিক ফুটে ওঠেনি— বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : প্রবাদে আছে— ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’। প্রবাদটি মানবজীবনে চিরন্তন সত্য হিসেবে বিবেচিত। সুন্দর জীবন গঠনে সততার বিকল্প নেই। সততার সঙ্গে আরও প্রয়োজন নৈতিকতা। পৃথিবীখ্যাত মনীষীগণ সততা ও নৈতিকতার দ্বারা তাঁদের জীবনকে মহৎ ও আদর্শরূপে গড়ে তুলেছিলেন। তাই এই পৃথিবীতে মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য সততার আশ্রয় গ্রহণ একান্ত জরুরি।
- ক. ‘তোমার জিনিস তোমারই থাক’— কথাটি কে বলেছে?
- খ. ‘উটের অনেক দাম’— প্রথম ইহুদি কেন একথা বলেছে?
- গ. উদ্দীপকের মনীষীগণের সঙ্গে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের প্রথম দুই ব্যক্তির বৈসাদৃশ্য দেখাও ৷
- ঘ. ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’— কথাটি ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূলভাবকে ধারণ করে কি? বিচার করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে শাবাব একটি দামি ঘড়ি কুড়িয়ে পেল। বাসায় ফিরে শাবাব তার বড়ো ভাইকে ঘড়িটি দেখালে সে সাথে সাথে থানায় গিয়ে জমা দিয়ে এলো। শাবাবের বড়ো ভাই তৌসিফ ছবি তুলে ফেসবুকেও পোস্ট দিল। ২ দিন পর প্রকৃত মালিক ঘড়িটি থানা থেকে নিয়ে গেলেন এবং শাবাব ও তৌসিফকে ফোন করে ধন্যবাদ জানালেন।
- ক. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের রচয়িতা কে?
- খ. ‘আল্লাহ তোমার ওপর খুশি হইয়াছেন, আর তাহাদের ওপর বেজার হইয়াছেন’— উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো।
- গ. উদ্দীপকের শাবাব ও তার বড়ো ভাই তৌসিফের মনোভাবের সঙ্গে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের কোন বিষয়টির সাদৃশ্য রয়েছে? নিরূপণ করো।
- ঘ. উদ্দীপকটি ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল ভাবনাকে কতটুকু ধারণ করতে পেরেছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : খলিফা হারুন-অর-রশীদের শাসনকালে বাগদাদে আলী কোজাই নামে এক বণিক বাস করত। সে হজব্রত পালনের জন্য মক্কায় যাওয়ার সময় তার সারাজীবনের সঞ্চয় একটি কলসিতে লুকিয়ে তার বন্ধু নাজিমের কাছে রেখে যায়। কলসির নিচে মোহর লুকিয়ে উপরে জলপাই দিয়ে তা ঢেকে রাখে এবং বন্ধুকে জলপাইয়ের কলসি বলেই উল্লেখ করে। অনেক দিন বন্ধু ফিরে না আসায় নাজিম খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে। এর মধ্যে একদিন তার স্ত্রী জলপাই খেতে চাইলে সে বন্ধুর কলসি থেকে জলপাই এনে দিতে যায় এবং ভাবে পরে নতুন জলপাই কিনে কলসিতে রেখে দেবে। জলপাই আনতে গিয়ে সে দেখে কলসির ভেতরে সোনার মোহর। তার মাথায় দুষ্টবুদ্ধি এলো। সে সব সোনার মোহর নিয়ে সিন্দুকে লুকিয়ে রাখল এবং কলসি নতুন জলপাই দিয়ে ভরে রাখল।
- ক. ফেরেশতারা কার হুকুমে সকল কাজ করে?
- খ. ফেরেশতা কেন তৃতীয় ইহুদিকে ভালো লোক বললেন?
- গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের কোন বিষয়ের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
- ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের একটিমাত্র দিক ধারণ করে”— উক্তিটির সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১১ : একবার কাঁটা ফুটল বাঘের গলায়। এ নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়ল বাঘ। উপায়ান্তর না পেয়ে শরণাপন্ন হলো বকের। বড় বকশিশ পাবে এই আশায় বক কাঁটা বের করতে রাজি হলো। কথামতো বক তার লম্বা ঠোঁট বাঘের গলায় ঢুকিয়ে কাঁটা বের করে নিয়ে এলো। স্বস্তি পেল বাঘ। বক এবার তার বকশিশ চাইলে বাঘ বলল “তুই আমার মুখে গলা ঢুকিয়েছিলি তখন যে চিবিয়ে খাইনি তাইতো বেশি।”
- ক. কে বহুভাষাবিদ পণ্ডিত ছিলেন?
- খ. এক ফেরেশতা কী জন্য ইহুদি বংশের তিন লোকের কাছে গিয়েছিলেন?
- গ. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
- ঘ. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের তিন ব্যক্তি এবং উদ্দীপকের বাঘটির ভূমিকা মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১২ :
“মসজিদে কাল শিরনি আছিল,- অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটি কুটি,
এমন সময় এলো মুসাফির গায় আজারির চিন
বলে, ‘বাবা, আমি ভুখা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা-ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,
‘ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে নমাজ পড়িস বেটা?”
- ক. ফেরেশতা কীসের তৈরি?
- খ. তিন ব্যক্তির কীভাবে রোগমুক্ত হয়েছিল?
- গ. ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের কোন বিষয়টি উদ্দীপকের সাথে সংগতিপূর্ণ ব্যাখ্যা কর।
- ঘ. উদ্দীপকটি ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূলভাবকে ধারণ করে কি- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১৩ : কালাম, আবুল ও হাফিজ একই গ্রামে বাস করে। তাদের অবস্থা তেমন ভালো নয়। কোনোমতে দিন অতিবাহিত করে। হাজী মকবুল সাহেব তাঁর যাকাতের টাকা দিয়ে আবুলকে একটা রিকশা, কালামকে একটা ভ্যানগাড়ি আর হাফিজকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দিল ৷ আর বলল, তোমরা পরিশ্রম করে খাও আর তোমাদের সাধ্যমতো গরিব মানুষের উপকার করো। কিছুদিন পর হাজী সাহেব তাদের পরীক্ষা করার জন্য এক ভিক্ষুককে পাঠাল তাদের কাছে সাহায্য চাইতে। আবুল আর কালাম কোনো সাহায্যই করল না। কিন্তু হাফিজ বিনে পয়সায় ভিক্ষুকের জামাটা সেলাই করে দিল।
- ক. স্বৰ্গীয় দূত কতজন ইহুদিকে পরীক্ষা করেছিলেন?
- খ. স্বর্গীয় দূত মানুষের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন কেন?
- গ. কালাম ও আবুলের কাজের মাঝে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের যে দিকটি প্রতিফলিত তা ব্যাখ্যা করো।
- ঘ. “হাফিজের কাজের মধ্যেই ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল শিক্ষা নিহিত”— কথাটি বিশ্লেষণ করো
সৃজনশীল উত্তর
ক. স্বৰ্গীয় দূত তিনজন ইহুদিকে পরীক্ষা করেছিলেন।
খ. প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি বলেই স্বর্গীয় দূত মানুষের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।
স্বর্গীয় দূত বলতে এখানে আল্লাহর দূত বা ফেরেশতাকে বোঝানো হয়েছে। ফেরেশতারা আল্লাহর হুকুমে কাজ করে থাকেন। আলোচ্য গল্পে তিনজন ইহুদিকে পরীক্ষার জন্য আল্লাহ এক ফেরেশতাকে পাঠান। ফেরেশতা তখন মানুষের রূপ ধারণ করে ইহুদিদের সামনে আসেন যাতে কেউ তাঁর আসল পরিচয় জানতে না পারে।
গ. কালাম ও আবুলের কাজের মাঝে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের প্রথম দুই ইহুদির অকৃতজ্ঞ আচরণের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
‘সততার পুরস্কার’ গল্পের প্রথম দুই ইহুদি তাদের আগের দুরবস্থার কথা অস্বীকার করে এবং ফেরেশতার প্রতি অমানবিক আচরণ করে। উদ্দীপকের কালাম এবং আবুলও ঠিক একই রকম চরিত্রের অধিকারী ।
উদ্দীপকের কালাম ও আবুল দরিদ্র ও অসহায় ছিল। হাজী মকবুল সাহেবের সহায়তায় তাদের জীবনে সুদিন আসে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা অকৃতজ্ঞ ও অহংকারী হয়ে ওঠে। এজন্য তারা দরিদ্র ভিক্ষুককে কোনো সাহায্যই করেনি যেমনটি দেখা যায় আলোচ্য গল্পের প্রথম দুই ইহুদির আচরণে। তারাও দরিদ্র বিদেশির রূপ ধারণকারী ফেরেশতাকে কোনো সাহায্য করেনি। অর্থাৎ উদ্দীপকের কালাম, আবুল এবং ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের প্রথম দুই ইহুদির আচরণে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় পাওয়া যায়।
ঘ. সততা ও নৈতিক মূল্যবোধের পরিচয় তুলে ধরাই ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল শিক্ষা, যা উদ্দীপকের হাফিজ চরিত্রের মাঝে সার্থকভাবে ফুটে উঠেছে।
‘সততার পুরস্কার’ গল্পে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা তৃতীয় ব্যক্তি তথা অন্ধ ইহুদির আচরণে প্রকাশ পেয়েছে। বিদেশি বিপদগ্রস্ত লোকটিকে সাহায্যার্থে পছন্দমতো জিনিস নেওয়ার আন্তরিক অনুরোধ করেছে।
উদ্দীপকের হাফিজ দরিদ্র অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। হাজী সাহেবের দেওয়া সেলাই মেশিন হাফিজের অবস্থা বদলে দিয়েছে। এজন্য সে সবসময় আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ থেকেছে। আর তাই অসহায় দরিদ্র ভিক্ষুক তার কাছে এলে সে ভিক্ষুকের জামাটা বিনে পয়সায় সেলাই করে দিয়ে কৃতজ্ঞতা ও নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছে।
‘সততার পুরস্কার’ গল্পের তৃতীয় ইহুদি এবং উদ্দীপকের হাফিজের মনোভাব একই ধরনের। নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন হলেও তারা অতীতকে ভুলে যায়নি। দরিদ্র অসহায়কে সহায়তা করে তারা নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছে। আর এটিই হচ্ছে ‘সততার পুরস্কার’ গল্পের মূল শিক্ষা। এ বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।
আজকের পোস্টে ষষ্ঠ শ্রেণীর সততার পুরস্কার গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করেছি।আশা করি অনেক উপকারে আসবে।নতুন নতুন কমন উপযোগী প্রশ্ন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।